
আসছে নতুন বই, ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি
- আপলোড সময় : ১৯-০২-২০২৫ ১১:০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৯-০২-২০২৫ ০১:২৩:৩০ অপরাহ্ন


পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের ‘মিলনমেলা’ একুশে বইমেলা শেষ হওয়ার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই ভিড় বাড়ছে মেলা প্রাঙ্গণে। আর নতুন নতুন বইও আসছে স্টলগুলোতে। পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে প্রাণের বইমেলা প্রাঙ্গণে শিশুদের আগমনে ফিরেছে উচ্ছ্বাস। তবে বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতার চেয়ে মেলায় ঘুরতে আসা মানুষের সংখ্যা বেশি। সরজমিনে মেলা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই এসেছেন দলবেঁধে, কেউ কেউ বন্ধুদের নিয়ে, কেউ আবার পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন মেলায়। ছিল শিশু, কিশোর-কিশোরীর সরব উপস্থিতিও। মেলায় আগতরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন নিজের প্রিয় লেখকসহ অন্য লেখকদের নতুন বই। মাঝেমধ্যে কিনছেন বইও। এদিন বড়দের পাশাপাশি এদিন মেলায় এসেছে ছোটরা। গতকাল মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার ১৮ তম দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ৭৯টি। আলোচনা অনুষ্ঠান : এদিন বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বেলাশেষের শহীদ কাদরী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারানা নূপুর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শামস আল মমীন এবং আহমাদ মাযহার। সভাপতিত্ব করেন হাসান হাফিজ। প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলা কবিতায় শহীদ কাদরী সমকালতাড়িত, সংবেদনশাসিত, স্বল্পপ্রজ এবং সত্যসন্ধিৎসু একজন কবি। জীবন ও শিল্পে তিনি অবৈষয়িক, আপাদমস্তক নাগরিক এবং শেষপর্বে বিশ্বনাগরিক। পূর্বাপর সমকাল-সচেতনতা ছিল তার মর্মগত। উন্মেষ-পর্বে কোনো দর্শন, মতবাদ কিংবা নির্দিষ্ট কাব্যাদর্শে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন না, তবে শেষপর্বে তিনি মতাদর্শী না হলেও সাম্যবাদের প্রতি গভীরভাবে আস্থাবান ছিলেন। সমকাল ও চলমান বাস্তবতার মধ্যে নিজের অস্তিত্ব ও কথামালাই তার কবিতার বিষয়। বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিলেও ফেলে আসা সময়ের জন্য দীর্ঘশ্বাসগুলো কবি লুকাতে পারেননি। তিনি স্বেচ্ছায় তার শতকের সীমাকে বরণ করেছেন জীবনাদর্শে ও কবিতায়। আলোচকদ্বয় বলেন, প্রবাসে অবস্থানকালে স্বদেশের চিন্তা কবি শহীদ কাদরীকে তাড়িত করেছে। স্বদেশ তার মানসজগতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে ছিল। তিনি ছিলেন পরিশীলনবাদী এবং ব্যক্তিমানুষ হিসেবে মননশীল। শব্দের ইশারা ও প্রতীকের মধ্য দিয়ে তার কাব্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। গদ্যরচনা ও অনুবাদকর্মেও শহীদ কাদরীর অনুপম দক্ষতা ছিল, তথাপি কবি হিসেবেই তিনি নিজেকে পরিচিত করতে চেয়েছেন। সভাপতির বক্তব্যে হাসান হাফিজ বলেন, বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল ও প্রতিভাবান কবি শহীদ কাদরী স্বতন্ত্র কাব্যভাষা নির্মাণের ক্ষেত্রে একজন পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। তার কবিতার বিষয় ও আঙ্গিক উভয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা কাব্যজগতে তার কবিতা নিঃসন্দেহে চিরস্থায়ী আসনে অধিষ্ঠিত থাকবে। এদিন লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন-কবি হাসান হাফিজ এবং গবেষক খান মাহবুব। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান : কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মো. ফজলুল হক এবং কবি আশিকুল কাদির। আজ ছিল মো. মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা’ এবং সবুজ শামীম আহসানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কৃষ্টিবন্ধন’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী নোশিন তাবাসসুম স্বরণ, মো. মমিনুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, মো. আলতাফ হোসেন, রুশিয়া খানম, আজিজুল হক খান। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন মো. আব্দুস সাত্তার খান (তবলা), এ কে আজাদ মিন্টু (কী-বোর্ড), মো. হাসান আলী (বাঁশি) এবং মো. ফারুক (অক্টোপ্যাড)। আজকের অনুষ্ঠান, আজ বুধবার অমর একুশে বইমেলার ১৯তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩ টায় এবং চলবে রাত ৯ টায় পর্যন্ত। এদিন বিকেল ৪ টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জন্মশতবর্ষ : রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জুলফিকার শাহাদাৎ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শাহাবুদ্দীন নাগরী। এতে সভাপতিত্ব করবেন সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ